আশিভাগ বোরো কাটা এবং মাড়াই শেষ হয়েছে। বাকী ২০ শতাংশ জমির ধান। সোমবার বিকেলে মধ্য বৈশাখে ঝড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টিতে খুলনায় মাঠের পর মাঠ বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকে রোগ বালাই, সেচ সংকট না হলেও বোরোর বাম্পার ফলনের ওপর কৃষক আশাবাদী ছিল। শেষ মুহূর্তে ঝড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টিতে কৃষকের কোটি কোটি টাকার বোরো ধান মাটিতে শুয়ে পড়ে।
খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্র জানান, গত ২৮ এপ্রিল জেলায় বিকেলে এক ঝলক বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টির সাথে শিলা। এ মৌসুমে এটাই প্রথম বৃষ্টিপাত। এদিনে ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ধান ক্ষেতে পানি জমে যায়। গত মঙ্গল ও বুধবার কৃষি শ্রমিকের মূল্য জনপ্রতি বেড়েছে দুইশ’ টাকা করে। এই মৌসুমে গত ২৫ এপ্রিল জেলায় ৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকায় সেদিনও কৃষি শ্রমিকের মজুরি বাড়ে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে ৬৫ হাজার ৫৩৬ সেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর। সূত্র মতে, এবারে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৯৮ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন।
গত সোমবারের কালবৈশাখীর তাণ্ডবে স্ব-স্ব এলাকায় ক্ষতির কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট কৃষকরা। আবাদের শেষ মুহূর্তে শিলার আঘাতে মাঠে ধান ঝরে পড়েছে। জেলায় অন্তত ১০ কোটি টাকার ধানের ক্ষতি হয়েছে। মাঠের কথা তুলে ধরেন ডুমুরিয়া উপজেলার আরাজি সাজিয়াড়া গ্রামের কৃষক রফিক সরদার ও রুদাঘরা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ গাজী, দিঘলিয়ার পানিগাতী ইব্রাহিম মোড়ল ও বটিয়াঘাটার রায়পুর গ্রামের কৃষক সাহেব আলী শেখ, কৃষক মোঃ মোশারেফ হোসেন, দিঘলিয়া গ্রামের কৃষক বাবু মোড়ল, দিঘলিয়ার ব্রম্যগাতি গ্রামের প্রান্তিক কৃষক হাবিল শেখ ও ওসমান শেখ, দাকোপের পানখালী গ্রামের কৃষক মোঃ আমিরুল শেখ, একই গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক শেখ, পাইকগাছার পুরাইকাটি গ্রামের বাসিন্দা বাবুলাল ঘোষ, পাইকগাছার মটবাটি গ্রামের বাসিন্দা এসএম বাবুল আক্তার, তেরোখাদার পানতিতা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ বেলাল।
জেলার রূপসার বাগমারা গ্রামের কৃষক মোঃ ওমর আলী শেখের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি এ মৌসুমী ৮ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন। এতে ধান উৎপাদন হয়েছে প্রায় দুইশ’ মণ। শিলা বৃষ্টির আগে ধান কাটা সম্পন্ন হওয়ায় তিনি ক্ষতির মুখে পড়েননি।
রূপসা উপজেলার কৃষি অফিসার তরুণ কুমার বালা, দাকোপ উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম, পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার একরামুল হোসেন বলেন, শিলার আঘাতে পাকা ধানের সামান্য ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খুলনার উপ-পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, বজ্রসহ বৃষ্টিপাতে ফুলতলার বিল ডাকাতিয়া এলাকার বেশ কিছু জমিতে পানি জমেছে। ৮০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। ফলে শিলার আঘাতে বোরো চাষির ক্ষতি কম হবে।
খুলনা গেজেট/কাজী মোতাহার রহমান/এমএম